রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ি এবং মিউজিয়াম গতকাল বুধবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মধ্যে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার একপর্যায়ে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে বুলডোজার দিয়ে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়। একই রাতে ধানমন্ডির সুধা সদনও আক্রমণ করা হয় এবং সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয়।
এ প্রতিবাদ শুরুর পেছনে ছিল বুধবার রাতের একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বক্তব্য। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ৩২ নম্বর সড়কের এই ঐতিহাসিক বাড়িটিতে হামলা চালান। প্রতিবাদের পর, বৃহস্পতিবার সকালে আবারও কর্মসূচি শুরু হয় এবং ভাঙচুর কার্যক্রম চলতে থাকে।
এর আগে, "মার্চ টু ৩২" আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা সন্ধ্যা ৭টা থেকে ধানমন্ডি এলাকায় জমায়েত হতে শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শরিফ ওসমান হাদি এবং হাসনাত আবদুল্লাহর মত নেতারা এই প্রতিবাদে যোগ দেন। রাত ৬টার মধ্যে সারা ঢাকা থেকে মিছিল এসে যোগ দেয়।
প্রতিবাদকারীরা রাস্তার শুরুতে একটি বড় পর্দায় 'জুলাই আগস্ট ম্যাসাকারের' ভিডিও প্রদর্শন করেন, যেখানে শাসক দলের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতার ছবি দেখানো হয়। এরপর ছাত্ররা বাড়িটির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতে থাকেন এবং রাত ৮টায় বুলডোজারের মাধ্যমে ভাঙচুর শুরু হয়। কিছু সময় পর, ছাত্ররা আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বুলডোজার দিয়ে বাড়ির অবশিষ্ট অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা, সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। তারা ‘স্বৈরাচারের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন। ছাত্ররা দাবি করেন, সরকার ও ছাত্রলীগের ফ্যাসিবাদী আচরণের বিরুদ্ধে তাদের এই আন্দোলন।
অন্যদিকে, খুলনায় শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি 'শেখ বাড়ি'ও রাতের অন্ধকারে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুরসহ বিভিন্ন শহরে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও নামফলক ভাঙচুর করা হয়েছে। কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের বাড়ি সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আক্রমণের শিকার হয়েছে।