যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মানবদেহে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণরূপে রোবটের সাহায্যে ডাবল ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথ সেন্টারে গত ২২ অক্টোবর চেরিল মেহরকার নামে ৫৭ বছর বয়সী এক নারীর দেহে ডাবল ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়। যে কাজটি করেছে একটি রোবট। রোগীকে দ্রুত সুস্থ করে তোলা এবং হাসপাতালে অবস্থানকাল কমিয়ে আনতে এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চেরিল মেহরকার এরইমধ্যে হাসপাতালের ভেতরে হাঁটাচলা শুরু করেছেন। শিগগিরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের দুই পাশে দুটি ফুসফুস থাকে। ডানপাশের ফুসফুস বাম পাশেরটির চেয়ে কিছুটা বড় হয়। এগুলো স্পঞ্জের মতো নরম ও কোমল এবং হালকা লালচে রঙের হয়।
গত সেপ্টেম্বরে এই হাসপাতালে সম্পূর্ণ রোবটিক পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো মানবদেহে একটি ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নিউ ইয়র্কের চিকিৎসকরা ডাবল ফুসফুস প্রতিস্থাপন করলেন।
এর আগে, ২০২২ সালে লস অ্যাঞ্জেলসের সিডার্স সিনাই হাসপাতালে রোবটিক পদ্ধতিতে একজনের দেহে একটি ফুসফুস (সিঙ্গেল লাং) প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। তবে রোবটের সাহায্যে ওই কাজটির আংশিক করা হয়েছিল। এবার সম্পূর্ণরূপে রোবটের সাহায্যে ডাবল ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হলো।
চেরিল মেহরকার নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজে (সিওপিডি) ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর তার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়।
মেহরকারের দেহে ফুসফুস প্রতিস্থাপনে নেতৃত্ব দেন এনওয়াইইউ ল্যাংগোন হেলথ সেন্টারের ফুসফুস প্রতিস্থাপন প্রোগ্রামের সার্জিক্যাল ডিরেক্টর ড. স্টেফানি এইচ. চ্যাং।
তিনি বলেন, ‘এই প্রযুক্তির সাহায্যে বড় ধরনের কাটাকাটির প্রয়োজন হয় না। সাধারণত যেখানে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত কাটার প্রয়োজন হয়, সেখানে এই অস্ত্রোপচারে ২ ইঞ্চির ছোট ইনসিশন দিয়েই কাজ শেষ করা সম্ভব। ফলে বুকে আঘাত অনেক কম হয়।’
একজন দাতার কাছ থেকে পাওয়া ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় চেরিল মেহরকারের দেহে। তিনি জানান, ফুসফুসের চিকিৎসার জন্য বছরের পর বছর ঘুরেছেন। অবশেষে এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন তাকে জানায় যে, তিনি ফুসফুস প্রতিস্থাপনের যোগ্য।