শুধু বোকা জুনিয়র্স-রিভার প্লেট ম্যাচ নয়, আর্জেন্টাইন ফুটবলে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আরেকটি ‘ক্লাসিকো’ আছে। রোজারিও সেন্ট্রাল বনাম নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজ। আর্জেন্টাইন ফুটবলে এটি প্রাচীনতম দ্বৈরথ। ১২০ বছরের পুরোনো এ দ্বৈরথে সর্বশেষ গত রোববার আর্জেন্টিনার প্রিমেরা ডিভিশনে নিওয়েল’সকে ১-০ গোলে হারায় রোজারিও সেন্ট্রাল। শৈশবের ক্লাব রোজারিওতে গত মে মাসে ফেরার পর এ রোববারের সেই ম্যাচে ফ্রিকিক থেকে চোখধাঁধানো গোল করে নিজের দলকে জেতান আনহেল দি মারিয়া।
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি এ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে নেইমারকে নিয়ে এমন এক আশার কথা বলেছেন, যা শুনে খুশি হতে পারেন ব্রাজিলের সমর্থকেরা। বিশ্বকাপজয়ী দি মারিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, নিওয়েল’সের বিপক্ষে ম্যাচে রোজারিওতে কোন বৈশ্বিক তারকাকে সতীর্থ হিসেবে পেতে চান?
বুঝতেই পারছেন, দি মারিয়া নেইমারের কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সাবেক এ উইঙ্গারের কথা শোনার আগে একটি বিষয় মনে করিয়ে দেওয়া ভালো। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে এতকাল লিওনেল মেসির সঙ্গে খেললেন দি মারিয়া, দুজনের মধ্যে সম্পর্কও চমৎকার—তাহলে মেসিকে বাদ দিয়ে কেন নেইমার? উত্তর হলো, নিওয়েল’সের মেসির শৈশবের ক্লাব। ৩৭ বছর বয়সী দি মারিয়া যেমন ইউরোপ মাতিয়ে ক্যারিয়ারের গোধূলিলগ্নে ফিরেছেন তাঁর শৈশবের ক্লাবে, মেসিও তেমনি আর্জেন্টিনায় ফিরলে নিশ্চয়ই রোজারিওতে ফিরবেন না! দি মারিয়া সম্ভবত সেই কারণেই মেসির নাম বলেননি। তবে এসব অনুমানই।
নেইমারকে রোজারিও-সতীর্থ হিসেবে কেন পেতে চান, সেই ব্যাখ্যায় দি মারিয়া বলেছেন, ‘কারণ নেইমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। আমি তাকে খুব ভালোবাসি। আমাদের মধ্যে সম্পর্কটাও চমৎকার। এখনো যোগাযোগ হয়। আমি জানি সে আর্জেন্টাইন ফুটবলকে কতটা পছন্দ করে এবং এটাও জানি সে সেন্ট্রাল-নিওয়েল’স ম্যাচে থাকতে চাইত।’
দি মারিয়ার মতো নেইমারও ইউরোপ মাতিয়ে ও সৌদি আরব ঘুরে গত জানুয়ারিতে ফেরেন ব্রাজিলে নিজের শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। ৩৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা চোটের কারণে সম্প্রতি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য ব্রাজিল জাতীয় দলে ডাক পাননি। তবে গত বৃহস্পতিবার এই চোট পাওয়ার আগে সান্তোসের টানা ৭ ম্যাচে ৯০ মিনিট মাঠে ছিলেন এবং এ মৌসুমে ১৯ ম্যাচে ৬ গোল করেছেন।
দি মারিয়া এরপর নেইমারকে নিয়ে এক স্বপ্নের কথা বলেছেন। ব্রাজিলিয়ান তারকাকে তিনি রোজারিওতে সতীর্থ হিসেবে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন এবং সেই ‘দাওয়াত’টি তিনি নিজেই নেইমারকে দিতে চান, ‘সে আমার সঙ্গে খেললে ভালোই হতো। হয়তো পরে তাকে (রোজারিওতে) আসার কথার বলার সুযোগ পাব, সেটা হবে দারুণ ব্যাপার।’
পিএসজিতে সতীর্থ ছিলেন দি মারিয়া ও নেইমার। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নেইমারকে ফরাসি ক্লাবটিতে সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন রোজারিওর এই অধিনায়ক। পিএসজিতে দুজনে মিলে জিতেছেন ১১টি ঘরোয়া ট্রফি। একসঙ্গে ১১৬ ম্যাচ খেলে জিতেছেন ৭৮ ম্যাচ, ১৭ ড্র এবং হেরেছেন ২১ ম্যাচ। এই পথে ২৪ গোল করার পাশাপাশি ৩৬টি গোল করিয়েছেন দি মারিয়া। নেইমার ৭৮টি গোল করার পাশাপাশি গোল করিয়েছেন দি মারিয়ার সমান!