কুষ্টিয়ার মিরপুরে সম্পত্তির লোভে মা মমতাজ বেগমকে (৫৪) হত্যা মামলায় তার ছেলে মুন্নাসহ (৩৫) তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৫ জুন) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমীন এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুন্না কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটদহচর গ্রামের মৃত ফজল বিশ্বাসের ছেলে।
মুন্নার বন্ধু ইয়াছিন আলীর ছেলে রাব্বি ও মুন্নার চাচা মৃত ইনছার বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল কাদের। তারা সবাই কাটদহচর গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি মমতাজ বেগম তার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।
মমতাজ বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি একমাত্র ছেলে মুন্নার সঙ্গে বসবাস করতেন। পরে মমতাজ বেগমকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একমাস পর নিহতের ছেলে মুন্নাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তার চাচা আব্দুল কাদের ও বন্ধু রাব্বি আলামিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি দুপুরে গলায় রশি পেঁচিয়ে মমতাজ বেগমকে ছেলে মুন্না তার বন্ধু রাব্বি ও চাচা আব্দুল কাদের হত্যা করেন। পরে লাশ বস্তাবন্দী করে পুকুরে ফেলে দেয়। মাকে হত্যার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২৫ জানুয়ারি অপহরণের জিডি করেছিলেন মুন্না।
পুলিশ জানায়, ছেলে মুন্না জুয়া খেলতেন এবং মাদকাসক্ত ছিলেন। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই তার ঝগড়া হতো।
সম্পদের লোভে ও টাকা চাওয়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মাকে হত্যা করে মুন্না। ঘটনার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মিরপুর থানা পুলিশ নিহত মমতাজ বেগমের বস্তাবান্দি গলিত লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই তোরাব আলী বাদী হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুর থানায় তিন জনের নামোল্লেখসহ একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মিরপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক কায়েশ মিয়া ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, সম্পত্তির লোভে মাকে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ছেলে মুন্না সহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।