ভোলার চার উপজেলায় গত পাঁচ দিনে ছয়টি বিষধর রাসেলস ভাইপারের দেখা মিলেছে। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ২টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ২টি, দৌলতখান উপজেলায় ১টি ও লালমোহন উপজেলায় ১টি। এ সময় স্থানীয়রা সাপগুলো পিটিয়ে মেরে ফেলেন। লোকালয়ে এমন বিষধর সাপ দেখা যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুন রবিবার সকালে প্রথমে ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়র্ডের সৈয়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা সাখাওয়াত হোসেনের বাথরুমে আড়াই হাত লম্বা একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখা যায়। পরে তারা সাপটি পিটিয়ে মেরে ফেলেন। এরপর ১৮ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের এক ব্যাক্তির বাড়ির পাশে রাসেলস ভাইপার দেখতে পেয়ে স্থানয়ীরা পিটিয়ে মেরে ফেলে। একই দিন রাতে ভোলার দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জালু মাঝির বসত ঘরে গর্ভবতী বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ দেখা যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিক সাপাটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। সাপের কামড়ে জালু মাঝির ঘরের তিনটি বিড়াল ছানার মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া ঈদের দুইদিন পর বুধবার বিকেলে জেলার তজুমদ্দিন উপজেলার চৌমহনী লঞ্চঘাট এলাকায় ফুটবল খেলার সময় একটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান লোকজন। এ সময় সাপটি আক্রমণ করতে লোকজনের দিকে তেড়ে আসে।
এই সাপটিকেও উপস্থিত লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলেন। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ভোলা সদর উপজেরার শিবপুার শান্তিরহাট এলাকায় চিনা কম্পানির বালুর মাঠে দেখা মিলে বিষধর এ রাসেলস ভাইপারের। এ ছাড়া একই দিন দুপুরের পর তজমুদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাচারি বাড়ির দরজায় লুকিয়ে ছিল রাসেলস ভাইপার। পরে সাপটিকে মেরে ফেলা হয়।
ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে ভোলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮ থেকে ১০টি বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার জীবিত উদ্ধার করে ভোলার চর কুকরি-মুকরি, মনপুরাসহ বিভিন্ন ম্যানগ্রোব বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
তবে এ সাপের কামড়ে ভোলায় এখনো কোনো মানুষের মৃত্যু ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয়দের দাবি, বন বিভাগের অবমুক্ত করা সাপগুলোই ঝর ও জলোচ্ছ্বাসের সময় পানির সঙ্গে লোকালয়ে চলে আসছে। এর আগে ভোলায় এ রকম রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব ছিল না।
ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, সাধারণত এ রাসেল ভাইপার লোকালয়ে কম আসে। গত কিছু দিন আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সময় রাসেলস ভাইপার সাপের আবাসস্থল পানিতে প্লাবিত হওয়ায় সাপগুলো লোকালয়ে চলে আসছে। তবে এটি যেহেতু বিষধর, তাই এ বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ঘরের যে সকল যায়গায় সাপ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব স্থনে কার্বলিক এসিড রাখার পরামর্শও দেন তিনি। পা
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরো জানান, আগামী শীত মৌসুম পর্যন্ত এ সাপের প্রাদুর্ভাব থাকতে পারে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।