ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

জবাবহীনতার অভিযোগ : চবিতে ৫ সমন্বয়কের পদত্যাগ

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক :

আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1834647 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1834647 জন
জবাবহীনতার অভিযোগ : চবিতে ৫ সমন্বয়কের পদত্যাগ
ছবি : সংগৃহীত

সমন্বয়কদের সমন্বয়হীনতা ও জবাবহীনতার অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেছেন। গতকাল শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ ঘোষণা করেন।


পদত্যাগকারীরা হলেন সমন্বয়ক সুমাইয়া শিকদার এবং চারজন সহসমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, ঈশা দে ও সাইদুজ্জামান রেদোয়ান।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব স্বৈরাচারের পতন করলেও পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে।



সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়করা জবাবদিহিতা করছেন না এবং নানা ধরনের সাফাই দিচ্ছেন, যা অনেকাংশেই একপাক্ষিক। প্রথম থেকেই যেসব সমন্বয়হীনতা ও অপরাজনীতির আভাস পেয়েছি, আমরা সেগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি।

লিখিত বক্তব্যে তারা আরো বলেন, প্রক্টর ও প্রভোস্টদের পদত্যাগের যৌক্তিকতা ও অযৌক্তিকতা বিষয়ে নানা ধরনের বিতর্ক উঠে আসছিল। আমরাও তাদের পদত্যাগ চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা ধাপে ধাপে।



ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আগমন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সব ধরনের লেজুড়বৃত্তি ও দখলদারি, দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের ব্যবস্থা করেই যেন ভিসি পদত্যাগ করেন। কিন্তু কোনো মতামতকে যাচাই-বাছাই না করেই সমন্বয়করা ক্যাম্পাসের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে ফেলেন। শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে সমালোচনার সঠিক কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি সমন্বয়ক কমিটিতেও।

তারা বলেন, আন্দোলনের সময় চবির সমন্বয়কসংখ্যা ছিল ২২ জন।



কিন্তু পরবর্তী সময়ে ৫ আগস্ট চবিতে সমন্বয়কের সংখ্যা হয় ৩০ জন। নতুন যেই কয়জন কমিটিতে যুক্ত হয়েছেন, তাদের বিষয় নিয়েও মূল সমন্বয়করা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেরনি। এমন সব ঘটনা, জবাবদিহিতা হীনতা ও ট্যাগা-ট্যাগির ফ্যাসিস্ট বয়ান আমাদের মনে স্বাভাবিক প্রশ্নের জন্ম দেয়। ক্যাম্পাস সংস্কারের কাজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে তারা তৎপর নন, প্রভোস্টদের পদত্যাগ না করিয়ে হলে শিক্ষার্থীদের উঠানোর ব্যাপারে আরো ভালো সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারতেন।

পদত্যাগকারী সমন্বয়করা আরো বলেন, তাই আমরা সবাই মিলে নিজ নিজ সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করছি।



আগামীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে যেসব কর্মসূচি পালন হবে তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে আমরা সব সময় ছিলাম এবং আগামীতেও থাকব।

সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি তুলে ধরে পদত্যাগকারী সহসমন্বয়ক আল মাশনূন বলেন, সমন্বয়কদের কাজ হলো সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে বসে তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবেন। তবে সমন্বয়করা তা না করে চট্টগ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন। আজকেও চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আলোচনাসভা আছে, আমরা তা বর্জন করেছি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ইস্যুতে আমদের ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা আলোচনা করেননি।


পদত্যাগের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, সমন্বয়ক হিসেবে আমাদের আর থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যেহেতু আমাদের আন্দোলন শেষ, দেশে অন্তর্বতীকালীন সরকার আছে, তাই আমাদেরও দায়িত্ব শেষ। আমরা সমন্বয়ক হিসেবে আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে থাকতে চাই না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সমন্বয়কদের আহ্বানে ছাত্রদের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে থাকব।


এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমরা সব সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে নিয়ে এসেছি, এখনো নিচ্ছি। এখানে সব কিছুই পরিষ্কার। কেউ ব্যক্তিগতভাবে অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করলে আমরা জোর করতে পারি না। সমন্বয়ক কমিটিতে অনেকেই নিরাপত্তার জন্য আসতে চাননি বলে কমিটি দিয়েও আমরা তা বিলুপ্ত করতে বাধ্য হয়েছি। যারা সাহস দেখিয়ে এগিয়ে এসেছেন, তাদের নিয়েই বর্তমান সমন্বয়ক কমিটি। এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়। আমাদের বিপ্লব চলমান। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে কেউ বিরোধিতা করলে আমরা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।


প্রসঙ্গত গত ৩০ জুলাই ২২ জন সদস্য করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণার করে পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে কমিটি বাতিল ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ। এরপর ৫ আগস্ট মোট ৩০ জনকে সদস্য করে আবার সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক :

আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন